Tuesday, July 17, 2012

ইয়াহুর প্রধান নির্বাহী মারিসা মেয়ার

সবাইকে বিস্মিত করে আজ মঙ্গলবার গুগল কর্মকর্তা মারিসা মেয়ারকে ইয়াহু করপোরেশন তাদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
এর আগে এ বছর দুইবার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পরিবর্তন হয়েছে ইয়াহুতে। মারিসা মেয়ার তৃতীয় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে আসছেন। বর্তমানে ইয়াহুতে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন ইয়াহুর গ্লোবাল মিডিয়া প্রধান রস লেভিনসন। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব বুঝে নেবেন মারিসা মেয়ার।
মারিসা মেয়ার ১৯৯৯ সালে গুগলের ২০তম কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। গুগলে তিনিই প্রথম নারী কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। মারিসা গুগলের জ্যেষ্ঠ পরিচালনা পরিষদের সদস্য ছিলেন। গুগলে তাঁর পেশাজীবন শুরুর সময় গুগল সার্চ প্রোডাক্টস ও ইউজার এক্সপেরিয়েনস-বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি। পরে সে পদ ছেড়ে লোকেশন-বেজড সার্ভিসের প্রধান হিসেবে যোগ দেন।
গুগল সার্চের জিও/লোকাল সার্ভিস দেখাশোনা করা ও ইঞ্জিন ব্যবহারকারীদের সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করছিলেন মারিসা।
মারিসা মেয়ার ২০০৮ সালে প্রযুক্তিবিশ্বে বেশ আলোড়ন তুলেছিলেন। এই সময় ফরচুন সাময়িকীর বিচারে সেরা ৫০ জন প্রভাবশালী নারীর তালিকায়ও তাঁর নাম উঠেছিল। এবার ইয়াহুর প্রধান নির্বাহী হিসেবে যোগ দিয়ে প্রযুক্তিবিশ্বে আবারও সাড়া ফেললেন তিনি।
ইয়াহুর পরিচালনা পর্ষদ মেয়ারকে হঠাত্ই নিয়োগ দিয়ে ফেলেছেএ—মন ধারণা প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের। এ পদের জন্য নিয়োগ-বিষয়ক কোনো আলোচনাতেই তিনি ছিলেন না। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিয়োগের ক্ষেত্রে সম্প্রতি ফেসবুকের সঙ্গে মামলা সমঝোতা করা লেভিনসনকেই উপযুক্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে মনে করা হচ্ছিল। এ পদে ভিডিওবিষয়ক ওয়েবসাইট হুলু এলএলসির প্রধান জ্যাসন কিলারের নামও এসেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত মেয়ারকেই ইয়াহুর ‘হট’ সিটের জন্য নির্বাচিত করেছে পরিচালনা পর্ষদ। ইয়াহুর এ পদটিকে ‘হট’ বলার কারণ, এই পদে গত পাঁচ বছরে পাঁচজন কর্মকর্তার বদল হয়েছে।
ফেসবুক ও গুগলের সঙ্গে ক্রমেই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পিছিয়ে পড়া ইয়াহুকে চাঙা করতে ও লাভে ফেরাতে কাজ করতে হবে মেয়ারকে।
নতুন পদ প্রসঙ্গে মারিসা মেয়ার এক টুইটার বার্তায় জানিয়েছেন, ১৭ জুলাই দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে তিনি খুবই উত্ফুল্ল।
ইয়াহুর প্রধান নির্বাহীর পদটিকে এখন সবচেয়ে ‘চ্যালেঞ্জিং’ পদ বলেই মনে করা হচ্ছে। ইয়াহুর এ পদটিতে স্কট থম্পসন মাত্র পাঁচ মাস টিকেছিলেন। কর্মী ছাঁটাই, বিভিন্ন সেবা বন্ধসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদক্ষেপ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে লাভে ফেরালেও জীবনবৃত্তান্তে ঘষামাজার অভিযোগে পদ ছাড়তে হয় তাঁকে। ফেসবুক, গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়া ইয়াহুকে লাভের মুখে দেখাতে নতুন কর্মকর্তা মেয়ারকে অনেক কাজ করতে হবে। ইয়াহুর ১১ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ তাই অন্তর্বর্তীকালীন সিইওর পরিবর্তে প্রযুক্তির জ্ঞান রয়েছে—এমন কর্মকর্তা হিসেবেই তাঁকে নির্বাচিত করেছেন। মারিসা মেয়ারের অতীত অভিজ্ঞতা ও কাজের ধরনে তাঁদের আস্থা রাখতে পারবেন বলেই ইয়াহুর কর্মকর্তারা মনে করছেন।

No comments:

Post a Comment